আমি নিজেও কিন্তু গুজবে বিশ্বাসী। গুজব শুনতে খুব ভাল লাগে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। আজ মঙ্গলবার (২৮ জুন) বিকেল ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ১০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইভিএম সংক্রান্ত সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সভার শেষে সভাপতির বক্তব্যে সিইসি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ইন্টারনেটের কোনো সম্পর্ক নাই বিধায় হেকিংয়ের কোনো সম্ভাবনা নাই। যে সংশয়ংটা, আমি নিজেও কিন্তু গুজবে বিশ্বাসী। গুজব শুনতে খুব ভাল লেগেছে। আমার জীবনও ওভাবে কেটেছে। এখন যখন আমাকে নিয়ে কথা শুনি সেগুলো কিন্তু সত্য না। অথচ আমি আগে এভাবেই গুজবই বিশ্বাস করতাম। আসলে মানুষের স্বভাবটাই হচ্ছে গুজবটা খুব শুনতে ভাল লাগে।আমরা ইভিএমের অন্ধ গ্রাহক ছিলাম না। সব আলোচনরা লিপিবদ্ধ করেছি। আমাদের সামর্থ্য কতগুলো তা দেখবো। এরপর সিদ্ধান্ত নেব। সম্পূর্ণ বা ফিফটি ফিফটি করবো কি-না সে সিদ্ধান্ত নেবো।
তিনি বলেন,আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবো, তখন সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আমরা কিন্তু কোনো বাজে মতলব নিয়ে আসিনি বা আমাদের কোনো পক্ষ থেকে এই ধরণের কোনো আশ্বাসও কেউ দেননি। কোনো রাজনৈতিক চাপ আমাদের ওপর নেই। এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন,সেই সময় সরকার থাকবে কিন্তু আওয়ামী লীগ থাকবে না। সরকার আর আওয়ামী লীগ এক না।
তিনি আরও বলেন,আমরা সরকারের কাছে আমরা হেল্প নেবো। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আমরা কোনো হেল্প নেবো না। প্রশ্নই আসে না। কাজেই আমরা বিশ্বাস করি, সরকার এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে যে বিভাজনটা আছে, সেই বিভাজনইটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি উচ্চারণ করতে শুনেছি উনি এ ব্যাপারে খুবই স্পষ্ট, সরকারের তরফে থেকে আমাদেরে সহায়তা দেওয়া হবে।
আমরা সেই সহায়তা পাওয়া অধিকারী। সেই সহয়তা আমরা আদায় করে নেবো। যেই সহায়তা আমরা প্রাপ্য সেই সহায়তা আমাদের দিতে হবে। সেই সহায়তা যদি দেওয়া না হয়, আপনারা যদি আশাই করেন যে সুন্দর ইলেকশন হবে, সুন্দর ইলেকশন হয়তো হবে না।
সিইসি বলেন,আরেকটা জিনিস হলো- আমরা আপনাদের মাঝে ঐক্য চাচ্ছি, নির্বাচন মাঠে সবাই থাকবেন। এবং বিভিন্ন পার্টির উপস্থিতি কিন্তু এক ধরণের ভারসাম্য সৃষ্টি করে নির্বাচনের মাঠে। আমরা পাঁচ-সাত কিন্তু এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে মোতায়েনের বিষয় থাকে, যেহেতু আমরা একদিনেই নির্বাচন করবো বা সবাই যদি চান চারদিনের ইলেকশন করার, কারণ আমরা একটা সংকট দেখি সেন্টারে কিন্তু আমরা পর্যন্ত ফোর্স দিতে পারছি না।সেই ফোর্সটা লাগত না যদি সবগুলো দল নির্বাচনের কেন্দ্রে এসে দাঁড়াত, তাহলে ওরাই ফোর্স হয়ে যেতো।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সিইসি বলেন, আমরা আশা করবো স্যার, আপনারা সরকার থেকে আমাদেরকে সরকারি সাহায্য সহায়তা দেবেন। আমরাও যে সহায়তা চাইবো তাও সাগ্রহে প্রদান করবেন। যাক আপনি বলেছেন (ওয়াবদুল কাদের হ্যাঁ বলেন) এজন্য আমরা আশ্বস্ত বোধ করছি। এবং এই আশ্বাসটা নিয়ে আমরা আগামীতে কাজ করে যাবো।
তিনি আরও বলেন,নির্বাচনের মাঠে এটা একটা সামগ্রিক একটা বিষয়, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সামষ্টিক একটা বিষয়।কাজেই আমাদের ওপর ছেড়ে দিলে হবে না। নির্বাচন কমিশন একাকী সফলতা অর্জন করতে পারবে না, যদি না অংশীজনরা তাদের দিক থেকে সহায়তার অস্ত্র সম্প্রসারণ করেন। আজকে ১৩ রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠকে করতে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে, দুই ধাপে ২৬ রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ইসি। গত ১৯ ও ২১ জুন দুই ধাপে ২৬টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের ইভিএম যাচাই বিষয়ক সভা করেছে ইসি। এই দুই ধাপে ১৮টি দল উপস্থিত থাকলেও সাড়া দেয়নি বিএনপিসহ আটটি দল।
আজ যেসব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল-এমএল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।