বয়ঃসন্ধিকালে যে কোনো ধরনের ত্বকেই ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে কিশোরীর মুখে অতিরিক্ত ব্রণ অভিভাবকদের রীতিমতো উদ্বেগের কারণ হয়েই দাঁড়ায়। ব্রণের কারণে বিবাহযোগ্য মেয়ের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে বৈকি! কিশোরীদের ব্রণসমস্যা এড়াতে নিয়মকানুন মেনে রূপচর্চা করা উচিত। হতাশ না হয়ে চিকিৎসকেরও পরামর্শ নিতে পারেন তারা।
যা করতে হবে : ব্রণ এড়াতে ত্বক সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। একক চিরুনি, তোয়ালে ব্যবহার করা উচিত। মুখম-ল মুছতে সরাসরি আলতো চাপে মোছা উচিত। জোড়ে আড়াআড়ি করে মোছা ঠিক নয়, বিশেষ করে রাত জাগবেন না, চা- কফি পান করবেন না, ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত ও অ্যালার্জি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে, ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এজন্য মুখে ব্যবহার করা উচিত প্রাকৃতিক উপাদানগুলো।
কিশোরীর ব্রণ ংসমস্যার সমাধান : খুব বেশি ব্রণ হলে ১ কাপ পানিতে ১ চা-চামচ গ্রিনটি দিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন। নির্যাস বের হলে এতে কিছু লবঙ্গ দিয়ে পেস্ট করে নিন। ব্রণে লাগিয়ে রাখলে খুব তাড়াতাড়ি ব্রণ চলে যাবে। প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ফেসওয়াশ তৈরি করে নিতে পারেন। ১ কাপ মুগডাল শুকিয়ে গুঁড়া করে তাতে সিকি ভাগ লবঙ্গ ও ১৫-২০টি তেজপাতা মিশিয়ে ব্লেন্ড করে কাচের বয়ামে ভরে রেখে দিতে হবে। বাইরে থেকে আসার পরপর এর সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিতে পারেন। এতে করে মুখে সাধারণত ছোট ছোট ব্ল্যাক হেডে যে ব্রণগুলো হয়, তা চলে গিয়ে ত্বক পরিষ্কার হয়ে যাবে। অ্যালোভেরার জেলও ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ভালো কাজ করে। ১ কাপ অ্যালোভেরার জেল বের করে নিয়ে গরম পানিতে কিছুক্ষণ রেখে ছেঁকে নির্যাস বের করে নিতে হবে। এরপর এই নির্যাসের সঙ্গে ৬-৮টি ভিটামিন-ই ক্যাপসুল মিশিয়ে কাচের বয়ামে ভরে ৭দিন পর্যন্ত ফ্রিজে রেখে দেওয়া যাবে। নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণ চলে যাবে। ত্বকের লাবণ্য ও আর্দ্রতাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অনেক সময় কিশোরীরা ফেসওয়াশ দিয়ে অতিরিক্ত মুখ ধুয়ে ত্বক শুষ্ক করে ফেলে। এতে করে ব্রণ তো যায়ই না, বরং ত্বকের ধরনও পরিবর্তন হয়ে যায়।
বয়ঃসন্ধি ও হরমোনের কারণ : ১৮ বছরের পর সাধারণত ব্রণের সমস্যা আর থাকে না।তবে ব্রণ হলে বাড়তি যত্ন নেওয়া ভালো। রোদে যাওয়ার আগে ঘরোয়া সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে শঙ্খ ও মুলতানি মাটির গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে রেখে দেওয়া যায়। বাইরে যাওয়ার আগে পানি বেশি আছে- এমন কোনো ময়েশ্চারাইজার দিয়ে নিন। এ পাউডারমিশ্রণ ভালোভাবে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। ফলে সিবাম গ্ল্যান্ড খুলে যাবে না এবং ব্রণও হবে না। তবে অবশ্যই বাসায় আসার পর ভালোভাবে ঘরোয়া যে ফেসওয়াশের কথা বলা হয়েছে, তা দিয়ে মুখ ধুতে হবে।
খাদ্যাভ্যাস : খাবারে পরিবর্তন আনতে হবে। এ সময় খাদ্যাভ্যাসের কারণেও সিবাম গ্ল্যান্ড খুলে গিয়ে ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়। ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রমণ হয়ে ব্রণ হয়।
যা মেনে চলতে হবে : কখনোই মুখ অপরিষ্কার রাখা যাবে না। রাতে অবশ্যই ১ গ্লাস দুধ পান করতে হবে। বেশি রাত জাগা, ঘুম কম হওয়া যাবে না। ব্রণে নখ, হাত দেওয়া যাবে না। রোদে পোড়া যাবে না। ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিতে হবে।যাদের ব্রণের সমস্যা আছে, তাদের মেকআপ না করাই ভালো। যদি মেকআপ করা হয়, তাহলে অবশ্যই পাউডার বেজ মেকআপ করতে হবে। তবে ত্বক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্নে থাকাটা ভালো।