
নানা কারণেই ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ধুলাবালি, দূষণ, অপরিচ্ছন্নতা এবং ঘামের কারণেই মূলত এ সমস্যগুলো দেখা দেয়। এই চর্মরোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো দাদ। এটি এক ধরনের ছত্রাকজনিত চর্মরোগ। শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাদ হতে পারে। এক্ষেত্রে চামড়ার ওপর গোল চাকার মতো লালচে ক্ষতস্থানের সৃষ্টি হয় এবং ক্ষতস্থানে চুলকানি হয়। অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ প্রয়োগ করে দাদের সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। তবে সবসময় হাতের কাছে এ ধরনের ওষুধ থাকে না। এমন পরিস্থিতিতে কিছু ঘরোয়া উপায়েই দাদের সমস্যার সমাধান পেতে পারেন। তাহলে জেনে নেয়া যাক, দাদ নিরাময়ের কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়-
ক্ষতস্থান পরিষ্কার রাখুন
যে জায়গায় দাদ হয়েছে সেই স্থান সবসময় পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। এতে চারিদিকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে না এবং প্রভাবিত এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। দাদের সংক্রমণ রোধ করতে সাবান অত্যন্ত কার্যকর। প্রতিদিন আক্রান্ত স্থান পানি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান দিয়ে ভাল করে পরিষ্কার করুন। তারপর জায়গাটা আলতো হাতে মুছে নিন।
অ্যাপল সাইডার ভিনেগার
অ্যাপল সাইডার ভিনেগারে শক্তিশালী অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি দাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কার্যকরি ভূমিকা রাখতে পারে। প্রথমে একটি পরিষ্কার তুলার বল অ্যাপল সিডার ভিনেগারে ভিজিয়ে নিন। তারপর ওই তুলোর বলটি দিয়ে সংক্রমিত জায়গায় আলতো হাতে বুলিয়ে নিন। ভালো ফল পেতে এই প্রক্রিয়াটি দিনে তিনবার করুন।
টি ট্রি অয়েল
টি ট্রি অয়েলে রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। এটি ছত্রাকজনিত ত্বকের ইনফেকশনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর। এর জন্য প্রথমে একটি পরিষ্কার তুলোর বলে কয়েক ফোটা টি ট্রি অয়েল নিয়ে সরাসরি সংক্রমিত স্থানে লাগিয়ে নিন। তবে আপনার যদি সংবেদনশীল ত্বক হয় তবে, টি ট্রি অয়েল নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এই প্রক্রিয়াটি দিনে দুই থেকে তিনবার করে করতে পারেন।
নারকেল তেল
নারকেল তেলে মাইক্রোবায়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল, উভয় বৈশিষ্ট্যই বিদ্যমান। দাদের সংক্রমণের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক নারকেল তেলের এ বৈশিষ্ট্যগুলো। দাদ ছাড়াও এটি ক্যান্ডিডা এবং অন্যান্য ছত্রাক সংক্রমণের ক্ষেত্রেও কার্যকর। এই প্রক্রিয়াটি করার জন্য, প্রথমে একটি পাত্রে নারকেল তেল নিয়ে হালকা গরম করে নিন। তারপর ওই হালকা গরম তেল সরাসরি আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করুন। এটি ত্বকে দ্রুত শোষিত হয়। দিনে অন্তত তিনবার এই প্রক্রিয়াটি করুন।
হলুদ
হলুদের স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। হলুদে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাছাড়া এটি কার্যকরী অ্যান্টিফাঙ্গাল হিসেবেও কাজ করে। সংক্রমণের বৃদ্ধিকে রোধ করতে হলুদ অত্যন্ত সহায়ক। এই প্রতিকারটি করতে প্রথমে তাজা হলুদ বাটা কিংবা হলুদ গুঁড়ো নিয়ে তাতে সামান্য জল মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর সংক্রমিত স্থানে সরাসরি লাগিয়ে শুকিয়ে নিন।
অ্যালোভেরা
দাদের সংক্রমণ রোধ করতে অ্যালোভেরাও দুর্দান্ত কার্যকর। অ্যালোভেরাতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য। অ্যালোভেরা দাদের চুলকানি, অস্বস্তি এবং প্রদাহের লক্ষণগুলিকে প্রশমিত করতে সহায়তা করে। দাদ নিরাময় করতে সংক্রমিত স্থানে সরাসরি অ্যালোভেরা জেল প্রয়োগ করুন। ভাল ফল পেতে দিনে তিনবার অ্যালোভেরা জেল প্রয়োগ করুন।