
হাল আমলে নারীদের ফ্যাশনের অন্যতম অনুষঙ্গ হাই হিল। নিজেকে স্মার্ট, সুন্দর এবং যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে অনেক মেয়ে হাই হিল জুতা পরতে পছন্দ করেন। তবে নারীরা ফ্যাশনের ব্যাপারে যতটা সচেতন পায়ের সুস্থতার ব্যাপারে কিন্তু ততটা সচেতন নন। এমন অবহেলার কারণে এবং দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা।
সু বা স্লিপারে পা সমান্তরালভাবে থাকে বলে শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে। অন্যদিকে হাই হিলের জুতা পরলে মেরুদণ্ডের আকৃতির স্বাভাবিক বিন্যাস বজায় থাকে না। শরীরের অধিকাংশ ওজন তখন পায়ের গোড়ালি দিয়ে না গিয়ে পায়ের পাতার সামনের অংশে ভর পড়ে। এতে অনেক সময় আঙুলে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। হাই হিলের জুতা পরলে শরীর অনেকটা সামনের দিকে ঝুঁকে যায়। বিশেষ করে কোমর ও হাঁটু বেশি ঝুঁকে যায়। এ জন্য কোমর ব্যথাসহ অন্যান্য শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
যেসব জটিলতা দেখা দিতে পারে-
➡ হিলের কারণে শুধু হাঁটুর ওপর না, গোড়ালির ওপরেও অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
➡ পায়ের ছোট ছোট জয়েন্টে ব্যথা এবং আর্থ্রাইটিসের সমস্যা দেখা দেয়।
➡ হাই হিল জুতা গোড়ালিকে উঁচু রেখে কোমরকে অস্বাভাবিকভাবে সামনে ঠেলে রাখে।
➡ মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বক্রতা নষ্ট হয়ে কোমরে প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।
➡ হাই হিল পরার সময় গোড়ালির পরিবর্তে পায়ের পাতা নেয় সমস্ত শরীরের ভার।
➡ এতে করে পায়ের পাতা শক্ত হয়ে যেতে পারে। পড়ে যাওয়া, গোড়ালি মচকে যাওয়া উঁচু জুতা ব্যবহারের খুবই সাধারণ ঘটনা।
➡ জুতার সামনের দিকটি ছড়ানো না হয়ে নৌকার মতো সরু হয়, এজন্য আঙুলেও চাপ পড়ে, ব্যথাও হয়।
করণীয়ঃ
দীর্ঘ সময়ের জন্য খুব উঁচু হিলের জুতা পরার অভ্যাস ত্যাগ করুন। নরম স্লিপার বা আরামদায়ক জুতা পরলে ভালো। যদি পরতেই হয় তবে প্রয়োজনে হিল কুশন বা কৃত্রিম আর্চসমৃদ্ধ জুতা পরতে পারেন। অনুষ্ঠান বা কোনো উৎসব ছাড়া বেশি হাঁটতে হয় এমন স্থানে এ ধরনের জুতা না পরাই ভালো।
উঁচু হিল ব্যবহারের পর পায়ে যদি ব্যথা থাকে, তবে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট অথবা যে জায়গায় ব্যথা হবে সেখানে ১০-১৫ মিনিট নরম কাপড়ে বরফ রেখে ম্যাসাজ করুন।
কিছু স্ট্রেচিং ও স্ট্রেনদেনিং ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনার হাঁটু ও পায়ের গোড়ালির মাংসপেশিকে শক্তিশালী করুন। এক্ষেত্রে বিছানায় সোজা হয়ে বসে একটি তোয়ালে দিয়ে পায়ের পাতা সামনের দিকে টানুন এবং ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এটি ১০-১৫ বার করে দিনে ২-৩ বেলা করুন।
অথবা একটি দেয়ালের সামনে বৃদ্ধাঙ্গুলের ওপর ভর করে দাঁড়ান এবং ২০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এটি ১০-১৫ বার করে প্রতিদিন ২-৩ বেলা করুন। এরপরও যদি ব্যথা থাকে তবে আপনি একজন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।