রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দুপল্লিতে সহিংসতার ঘটনায় র্যাবের হাতে আটক হওয়া প্রধান অভিযুক্ত এসএম সৈকত মণ্ডল (২৪) একজন ছাত্রলীগ নেতা। তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজের দর্শন বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র। তিনি ওই বিভাগের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। সৈকত মণ্ডল উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের চেরাগপুর গ্রামের রাশেদুল মণ্ডলের ছেলে।
এদিকে কারমাইকেল কলেজ শাখার পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সৈকতকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ১৮ অক্টোবর তাকে অব্যাহতি দেয়া হলেও এটি শনিবার (২৩ অক্টোবর) প্রচার পেয়েছে।
কারমাইকেল কলেজ শাখার সভাপতি সাইদুজ্জামান সিজার ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তাকে বহিষ্কারের বিষয়ে কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুজ্জামান সিজার জানান, সৈকতকে গত ১৮ অক্টোবর ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে হামলার ঘটনায় সৈকত ও আরেক আসামি রবিউল ইসলামকে ঢাকার টঙ্গী থেকে শুক্রবার রাতে আটক করেছে র্যাব। র্যাবের ভাষ্য- ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক মন্তব্য এবং মিথ্যা পোস্টের মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে স্থানীয় লোকজনকে উত্তেজিত করেন সৈকত মণ্ডল। আর ঘটনার রাতে বটেরহাট জামে মসজিদ থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে স্থানীয় লোকজনকে জড়ো করেন তার সহযোগী রবিউল ইসলাম (৩৬)। এরপরই হামলা চালানো হয় রামনাথপুর ইউনিয়নের বড়করিমপুর কসবা জেলেপল্লিতে।
রবিউল ইসলাম বটেরহাট জামে মসজিদের ইমাম এবং সে খেজমতপুর গ্রামের মৌলভী মো. মোসলেম উদ্দিন বাবুর ছেলে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানায় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
শনিবার র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলছেন, সৈকত মণ্ডল আগে থেকেই সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়িয়ে আসছিল। কুমিল্লার ঘটনার পর থেকেই সে নানারকম উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে আসছে। হামলার পেছনে গুজব ছড়াতে সে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। রবিউল ইসলাম তার এসব বক্তব্য প্রচারে সহযোগিতা করেছে।
কমান্ডার মঈন আরও বলেন, আটক হওয়া সৈকত মণ্ডল যে গ্রামে আগুন দেয়, সেই গ্রামের পাশের মসজিদে গিয়ে মাইকিং করে উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য দেয় এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সবাইকে জড়ো হতে বলে। পরবর্তীতে সে একজন আত্মীয়কে দায়িত্ব দেয় মাইকিং করার জন্য। সেই গ্রামের একটি উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে সবাইকে (হামলায়) নেতৃত্ব দেয়।
এদিকে রংপুর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান সিদ্দিক রনি আমার সংবাদকে বলেন, এ বিষয়ে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য নিতে পারেন। আমাকে গণমাধ্যম থেকে যারাই ফোন করেছেন সকলকেই আমি এ পরামর্শ দিয়েছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৮ আগস্ট ওই কমিটির অনুমোদন দেন কলেজ ছাত্রলীগ কমিটির সভাপতি সাইদুজ্জামান সিজার ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আহমেদ।