
এগারো জন নারী পরিচ্ছন্নতাকর্মী একত্রে ২৫০ রুপি দিয়ে গত জুনে লটারির একটি টিকিট কেনেন। তাদের আনন্দের আর সীমা রইল না যখন লটারিতে ১০ কোটি রুপির জ্যাকপট জিতে যান তারা। গত বুধবার (২৬ জুলাই) ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ ভারতের রাজ্য কেরালায়। সবুজ পোশাকে হারিথা কর্ম সেনার সদস্য তারা।
পারাপ্পানানগাদি পৌরসভায় অধীনে কর্মরত এই ১১ নারী। শহরের বিভিন্ন বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করেন এই নারীরা। কখনো কখনো তাদের সংগ্রহ করা আবর্জনার কোনো অংশ প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রির পর এর সামান্য একটা অংশ জুটে তাদের কপালে। খবর ইন্ডিয়া টাইমস।
স্বাভাবিকভাবেই এই আয়ে তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমন অবস্থা হয়। কখনো কখনো সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালাতে ধার–কর্যও করতে হয়। তাই একটু ভালো থাকার আশায় কখনো কখনো কয়েক জন মিলে লটারির টিকিট কেনেন।
‘একবার আমরা এক হাজার রুপির একটা পুরস্কার জিতি এবং অর্থটা ভাগাভাগি করে নেই।’ বলেন রাধা। সাধারণত দলের সদস্যদের হয়ে তিনিই লটারির টিকিটটা কেনেন। গত মাসে তারা সিদ্ধান্ত নেন ২৫০ রুপির বাম্পার প্রাইজ লটারির টিকিট কেনার। লটারিটির আয়োজক কেরালা রাজ্যের প্রাদেশিক সরকার।
কুতিমালু নামের ৭২ বছরের এক নারী পরিচ্ছন্নতাকর্মী জানান, যখন রাধা অর্থ সংগ্রহ করছিল তখন তার মন খারাপ হয়ে যায়। কারণ তার কাছে যৌথভাবে লটারি কিনতে সামান্য এক ভাগ ২০-২৫ রুপি দেয়ার মতো পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না। ‘তখনই চেরুমানিল বেবি (দলের আরেক সদস্য) জানায় ওর কাছে ২৫ রুপি আছে। টিকিট কেনার জন্য অর্ধেক আমাকে ধার দিতে রাজি আছে সে।’ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন এই পরিচ্ছন্নতাকর্মী। কাজেই এই দুই নারী সাড়ে ১২ রুপি করে দেন তাদের অংশ হিসেবে, বাকি নয়জন দেন ২৫ রুপি করে।
‘ঠিক করি, কিছু জিতলে সমান ভাগ করে নেব আমরা,’ বলেন কুতিমালু, ‘আমরা কখনোই ভাবিনি এত বড় পুরস্কার জিতব।’ লটারির ড্রর পরদিন তাদের একজন স্বামীকে লটারির ফলাফল দেখতে বলেছিলেন। তখনই জানতে পারলেন বাম্পার পুরস্কারটা জিতে গেছেন তারা। তখন ‘এই নিয়ে চতুর্থবার বাম্পার পুরস্কারের জন্য টিকিট কিনেছিলাম আমরা। আর চতুর্থবারে সৌভাগ্য ধরা দিল আমাদের কাছে।’ বলেন রাধা।