চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটে এমএ মান্নান ফ্লাইওভারের র্যাম্পের পিলারে কোনো ফাটল নেই বলে জানিয়েছেন চসিকের বিশেষজ্ঞ টিম। নকশা প্রণয়নকারি প্রতিষ্ঠান ডিজাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (ডিপিএম) কনসালটেন্টস লিমিটেডের বিশেষজ্ঞরাও ফাটল পাননি বলে জানিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার ফ্লাইওভার পরিদর্শনকালে চসিকের বিশেষজ্ঞ টিমের পরিদর্শকরা এ মন্তব্য করেছেন। তবে এ র্যাম্পে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে কি-না তা বুধবার (৩ নভেম্বর) তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া সাপেক্ষে বলা যাবে বলে জানিয়েছেন চসিকের বিশেষজ্ঞ টিম।
এ টিমে ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) প্রফেসর ড. আব্দুর রহমান এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম।
পরিদর্শক দলে থাকা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, যেটি ফাটলের মতো মনে হচ্ছে, সেটি আসলে ফাটল নয়। দূর থেকে ছবি তোলায় মনে হবে ফাটল। আমরা ওপরে উঠে দেখেছি, পরীক্ষা করেছি। এটি ‘ফলস কাস্টিং’।
চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, এখানে মেজর কোনো ফল্ট আছে বলে মনে হয়নি। তবে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত ফল্ট নেই এটা বলা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, যান চলাচল শুরু করার ব্যাপারে এখনই সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিদর্শন টিম একটি লিখিত রিপোর্ট দেবে। আগামীকাল সেটা দেয়ার কথা রয়েছে। ফ্লাইওভার খোলার ব্যাপারে তখনই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ফ্লাইওভারের পিলারে ফাটল পাননি ডিপিএম বিশেষজ্ঞরা
এর আগে গত ২৭ নভেম্বর ফ্লাইওভারের র্যাম্পটির নকশা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিজাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (ডিপিএম) কনসালটেন্টস লিমিটেডের বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, ফ্লাইওভারের কোনো ফাটল তারা খুঁজে পাননি। ফাটলের জায়গাটিকে আন ফিনিশিং জয়েন্ট বলে দাবি করেন তারা।
একইদিন একটি সভায় ফ্লাইওভারের ফাটলের নিরপেক্ষ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় চসিক। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) একজন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) একজন প্রকৌশলীর সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগে এসংক্রান্ত চিঠিও পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর বহদ্দারহাট এম এ মান্নান ফ্লাইওভারের আরাকান সড়কমুখী মদিনা হোটেলের সামনে পাশাপাশি দুটি র্যাম্পের পিলারে ওপরের অংশে বেশ বড় ধরণের ফাটল দেখতে স্থানীয়রা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ফাটলের বেশ কয়েকটি ছবি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণের ৪ বছরের মাথায় ফ্লাইওভারের এমন অবস্থায় ঘটনাটি হয়ে ওঠে টক অব দ্যা টাউন।
পরদিন সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ফ্লাইওভারের রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। নির্মাণে ত্রুটি থাকার কারণে এই ফাটল দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। অন্যদিকে প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে এই ফাটল দেখা দিয়েছে। যদিও শুরু থেকেই একে তেমন কোনো সমস্যা বলে মনে করেনি সিডিএ’র প্রকৌশল বিভাগ।