চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টাকারী সেই স্বামীও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, সীতাকুণ্ডের প্রেমতলা এলাকার বাসিন্দা রামচন্দ্র সূত্রধরের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে যুথি সূত্রধরের (২৩ ) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বাঁশখালীর কালীপুরের মৃত শুধাংশ ধরের ছেলে অভি ধরের (২৭)। তারা দুই বছর আগে পালিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের আগে অভি আশ্বাস দিয়েছিল কিছুদিনের মধ্যে যুথিকে তার স্ত্রী করে বাড়িতে নিয়ে যাবে। কিন্তু এতে আপত্তি জানায় অভির পরিবার। অভি উচ্চবংশীয়। কিন্তু যুথির পরিবার তার চেয়ে নিন্ম বংশের। এটিই ছিল অভির পরিবারের আপত্তি। এ কারণে শেষ পর্যন্ত শ্বশুর বাড়িতে স্থান হয়নি যুথির। এ নিয়ে দিন দিন স্বামীর সাথে তার দূরত্ব বাড়তে থাকে। এর জেরে দেড় মাস আগে যুথি স্বামীকে ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে। এতে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি অভির মনে। ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে অভি।
আরও জানা যায়, গত ২৭ অক্টোবর অভি শ্বশুরবাড়িতে এসে স্ত্রী যুথিকে ফিরিয়ে নিতে চায়।কিন্তু স্ত্রী যুথিকা তার সাথে আর যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়। এতে চরম ক্ষোভে ধারালো ছুরি দিয়ে কোপাতে থাকে যুথিকে। ঘটনাস্থলেই যুথির মৃত্যু হয়। শেষে নিজের পেটে ছুরিকাঘাত করতে থাকে অভি। পরে তাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন রাতেই অভির বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যা ও আত্মহত্যার চেষ্টার অপরাধে মামলা দায়ের করেন তার শ্বশুর রামচন্দ্র সূত্রধর। সেই থেকে পুলিশ পাহারায় অভির চিকিৎসা চলতে থাকে। পরে গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অভিরও মৃত্যু হয়।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী অভিধর স্ত্রী যুথীকা সূত্রধরকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এর পর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা যান।