মানুষ এখন অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। সবাই চায় রোগা হতে। তবে সৌদি যুবক খালিদ বিন মোহসেন শারির কাহিনি সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী মানুষ ছিলেন খালিদ । সে সময় খালিদের ওজন ছিল ৬১০ কেজি। অসম্ভব ভারী চেহারা নিয়ে চলাফেরা করা তো দূর, বিছানা থেকে ওঠার পর্যন্ত ক্ষমতা ছিল না তাঁর। নাওয়া-খাওয়া থেকে প্রাতঃকৃত্য সবই করতে হতো খাটে শুয়েই। খালিদের এই দুর্দশা দেখে সৌদির সাবেক বাদশাহ আবদুল্লাহ তার জীবন বাঁচানোর জন্য একটি ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসেন। বাদশাহ খালিদকে বিনা খরচে উচ্চস্তরের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। একটি জটিল চিকিৎসা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় ৬১০ কেজি ওজনের সৌদির এই নাগরিককে।
কিন্তু, তারপরই ঘটে যায় মিরাকল। গোটা দুনিয়াকে চমকে দিয়ে ৫৪৭ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলেন ওই যুবক। সৌদির জাজেন থেকে চিকিৎসার জন্য তাঁকে রিয়াদের কিং ফাহাদ মেডিক্যাল সিটিতে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালের বিশেষ ধরনের শয্যায় রাখার ব্যবস্থা করা হয় তাঁকে। যেহেতু ৬১০ কেজির খালিদের একচুল নড়চড়ার ক্ষমতা ছিল না তাই ৩০ জন চিকিৎসকের একটি দল গঠন করা হয় বিরল রোগের চিকিৎসার জন্য। ডাক্তারদের পরামর্শ মতো তৈরি হয় খাদ্যতালিকা বা ডায়েট চার্ট। পাশাপাশিই চলতে থাকে মানসিক চিকিৎসাও। খালিদের চিকিৎসার মধ্যে গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারি, কাস্টমাইজড ডায়েট , ব্যায়াম এবং ফিজিওথেরাপি সেশন অন্তর্ভুক্ত ছিল। এসবের লক্ষ্য ছিল খালিদের জীবনকে পুনরায় গতিশীল করা। সে সময় খালিদ অবিশ্বাস্য ফলাফল দেখেছেন। মাত্র ছয় মাসে তার শরীরের ওজন প্রায় অর্ধেক কমে যায়। ২০২৩ সাল নাগাদ, খালিদ একটি আশ্চর্যজনক পরিবর্তন এনে ৫৪৭ কেজি ওজন কমিয়ে সাড়ে ৬৩ কেজিতে নেমে আসেন। বন্ধু এবং পরিবারের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল থেকে নিজের গতিশীলতা ফিরে পাওয়া খালিদের কাছে ছিল স্বপ্নের মতো। এখন, তিনি "স্মাইলিং ম্যান" হিসাবে পরিচিত, চিকিৎসকরাই এই নাম দিয়েছেন তাঁকে।
সূত্র : ইকোনমিক টাইমস