ইন্টারনেট দ্রুত পরিবর্তনশীল এক জগৎ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইভিত্তিক চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি বর্তমানে এই পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। ফলে কিছু নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ধীরে ধীরে গুরুত্ব হারাচ্ছে।
প্রোগ্রামিং বিষয়ক প্রশ্নোত্তর ওয়েবসাইট
স্ট্যাক ওভারফ্লোর মতো প্রোগ্রামিং বিষয়ে প্রশ্নোত্তর ওয়েবসাইটগুলো চ্যাটজিপিটির প্রভাবে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগে যেখানে প্রোগ্রামাররা কোডের সমস্যা সমাধানে স্ট্যাক ওভারফ্লোর শরণাপন্ন হতেন, এখন তারা সেসব প্রশ্ন সরাসরি চ্যাটজিপিটিতে করছেন।
চ্যাটজিপিটি দ্রুত উত্তর দেয়, একই সঙ্গে তা সহজ ও ইন্টারঅ্যাক্টিভ। উদাহরণস্বরূপ, কোডের কয়েকটি লাইন না বুঝলে, চ্যাটজিপিটি তা ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করতে পারে। পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক ধারণা বা ফলোআপ প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারে।
তবে স্ট্যাক ওভারফ্লো একেবারে অপ্রয়োজনীয় হয়ে যায়নি। এটি এখন জটিল সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞদের গভীর আলোচনা ও উত্তরের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে টিকে থাকবে।
সার্চ ইঞ্জিন
চ্যাটজিপিটির আরেকটি বড় প্রভাব পড়েছে গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনগুলোর ওপর। আগে ইন্টারনেটে তথ্য খুঁজতে একাধিক ওয়েবসাইট ঘুরে দেখতে হতো। এখন ব্যবহারকারীরা সরাসরি চ্যাটজিপিটি থেকে প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছেন।
উদাহরণস্বরূপ, একটি বিশেষ রেসিপি বা মেকানিক্যাল কি-বোর্ডের বিভিন্ন সুইচ সম্পর্কে জানার জন্য গুগলে ঘাঁটাঘাঁটি করার পরিবর্তে চ্যাটজিপিটি দ্রুত ও প্রাসঙ্গিক তথ্য সরবরাহ করতে পারে। চ্যাটজিপিটির ইন্টারঅ্যাক্টিভ লেভেল ও ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী ব্যক্তিগত পরামর্শ দেওয়ার ক্ষমতা গুগলের সার্চ ইঞ্জিনের তুলনায় অনেক আধুনিক মনে হয়।
শিক্ষামূলক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
খান একাডেমি ও চেগের মতো শিক্ষামূলক ওয়েবসাইটেও চ্যাটজিপিটির প্রভাব পড়েছে। চ্যাটজিপিটি বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে তাদের দক্ষতা ও শেখার ধারা অনুযায়ী ব্যক্তিগত টিউটরিং সেবা দিতে পারে।
এই টুল শিক্ষার্থীদের জন্য আরও প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় শেখার অভিজ্ঞতা তৈরি করেছে। ছাত্ররা সহজে কঠিন বিষয়গুলো ভেঙে ভেঙে বুঝতে পারেন। তাদের নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর পান, যা অনেক সময় প্রচলিত শিক্ষণ পদ্ধতিতে সম্ভব হয় না।
তথ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট
উইকিপিডিয়ার মতো তথ্যভিত্তিক প্ল্যাটফর্মেও চ্যাটজিপিটির প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। উইকিপিডিয়া বিস্তারিত ও সূত্রসহ তথ্য দেয়, যা নানা ধরনের গবেষণার জন্য অপরিহার্য। তবে দ্রুত ও সরাসরি উত্তর পেতে ব্যবহারকারীরা এখন চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করছেন।
তবে উইকিপিডিয়া, স্ট্যাক ওভারফ্লো ও খান একাডেমির বিকল্প নয় চ্যাটজিপিটি। এই প্ল্যাটফর্মগুলো এখনো নির্দিষ্ট প্রয়োজনের ক্ষেত্রে অপরিহার্য। এআই প্রযুক্তির প্রসার অনেক ওয়েবসাইটের ভূমিকা বদলে দিচ্ছে। তবে এই প্ল্যাটফর্মগুলো টিকে থাকতে হলে নিজেদের কৌশল ও পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। চ্যাটজিপিটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা সহজ ও ইন্টারঅ্যাক্টিভ করে তুলেছে।