ক্যালিফোর্নিয়ার এক সৈকতে সম্প্রতি ভেসে এসেছে একটি বিরল প্রজাতির ওরফিশ, যা ইতিহাস ‘অশুভ দূত’ বা ‘ধ্বংসযজ্ঞের বার্তাবাহক’ হিসেবে পরিচিত। এটি চলতি বছরে ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে দ্বিতীয়বার দেখা মিলল। ১৯০১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র ২১টি ওয়ারফিশ ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে দেখা গেছে। গভীর সমুদ্রের এই মাছকে ‘দুর্যোগের পূর্বাভাসদাতা’ বলে বিবেচনা করা হয়।
এই বিরল মাছ সাধারণত দেখা যায় না। বরং বিপদ আসার আগে দেখা দেয় বলে মনে করা হয়। এই মাছ গভীর সমুদ্রে বাস করে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩ হাজার ৩০০ ফুট নিচে মেসোপেলাজিক অঞ্চলে এদের বসবাস, যেখানে সূর্যের আলো পৌঁছায় না। ওয়ারফিশ ২০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এর দীর্ঘ ফিতার মতো আকৃতি প্রাচীনকাল থেকেই নানা মিথ ও রহস্যের জন্ম দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখনো এই প্রজাতি সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য সংগ্রহ করতে পারেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিপস ইনস্টিটিউশন অব ওশানোগ্রাফির গবেষক অ্যালিসন ল্যাফেরিয়ার গত সপ্তাহে প্রায় ১০ ফুট লম্বা ওরফিশটি খুঁজে পান। এর আগেও একই অঞ্চলে একাধিক ওরফিশ দেখা গেছে। তবে এমন দেখা পাওয়া অত্যন্ত বিরল।
ওরফিশের উপস্থিতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস হিসেবে বহু বছর ধরে আলোচিত। ২০১১ সালে জাপানের ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামির আগে ২০টি ওরফিশ উপকূলে ভেসে আসে, যা এই ধারণাকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে। তবে ২০১৯ সালে জাপানের এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, ওরফিশের সঙ্গে ভূমিকম্পের কোনো বৈজ্ঞানিক সম্পর্কের প্রমাণ মেলেনি। ফলে এ নিয়ে বিতর্ক এখনো রয়ে গেছে। সক্রিপস ইনস্টিটিউশনের গবেষক বেন ফ্রেবল বলেছেন, সমুদ্রের অবস্থার পরিবর্তন ও ওরফিশের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সাম্প্রতিক সময়ে এগুলোর বেশি দেখা পাওয়া যাচ্ছে। আগস্ট মাসে যখন প্রথম ওরফিশটি পাওয়া যায়, তখন তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরও জানান, লা জোলা কোভ এলাকায় যে ওরফিশটি পাওয়া গেছে, সেটি ১২ ফুট লম্বা ছিল। এ ধরনের ঘটনা বিরল হলেও এ নিয়ে গবেষণা নতুন নতুন তথ্য তুলে আনতে পারে। গভীর সমুদ্র থেকে উঠে আসা এই রহস্যময় ওরফিশের রহস্য এখনো পুরোপুরি উন্মোচিত হয়নি। তবে এটি নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে গবেষক ও সাধারণ মানুষের।